অনেকে রক্ত দিতে দ্বিধায় ভোগেন। এর কারণ রক্তদানের পদ্ধতি ও পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অযথা ভীতি। প্রত্যেক সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারী প্রতি চার মাস অন্তর নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে রক্তদান করতে পারেন। এতে স্বাস্থ্যে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব তো পরেই না বরং নিয়মিত রক্তদানের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।
☞ রক্ত কৃত্রিম ভাবে ল্যাব্রটারীতে তৈরি করা সম্ভব নয়, অর্থাৎ একটি অসুস্থ মানুষের জরুরী প্রয়োজনে কেবলমাত্র অন্য একজন সুস্থ্য মানুষই রক্তদান করতে পারবে। তাই সকল সুস্থ্য মানুষের রক্তদানে এগিয়ে আসা একটি নৈতিক দায়িত্ব হওয়া উচিত।
☞সবচেয়ে বড় কাথা হচ্ছে আপনার দানকৃত রক্তে একজন মুমূর্ষ রুগীর জীবন বাঁচাবে। তাই রক্তদান হোক অসুস্থ মানুষের জীবন বাচাঁতে।
☞আজ যদি আপনি একজনের প্রয়োজনে রক্তদানে এগিয়ে আসেন তাহলে ঠিক একই ভাবে আপনার প্রয়োজনেও অন্য একজন এগিয়ে আসবে। রক্তদান হোক মানুষের কল্যানে মানুষেরই জন্য।
☞ রক্তদান আপনার শরীরের সুস্থ্যতাকে নিশ্চিত করে। কারন রক্তদানের সময় হেপাটাইসিস বি, সি,সিফিলিস, ম্যলেরিয়া এবং এইডস এই ৫টি রোগের স্ক্রিনিং রিপোর্ট পাওয়া যাবে বিনামূল্যে, যা একজন রক্তদাতাকে আশ্বস্ত করে তার সুস্থতা সম্পর্কে, যেটা সাধারন মানের কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কমপহ্মে কয়েক হাজার টাকা খরচ হবে।
☞ রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্যের বা সওয়াবের কাজ। পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ৩২ নং আয়াতে আছে, ‘একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সমগ্র মানব জাতির জীবন বাঁচানোর মতো মহান কাজ।’ ঋগ্বেদে বলা হয়েছে ‘নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘজীবন ও অমরত্ব।’ (ঋগবেদঃ ১/১২৫/৬)
☞ কারো রক্তে যদি লৌহের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে রক্তে কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনের পরিমাণ বেড়ে যায় ও ধমনী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যার ফলশ্রুতিতে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত রক্তদিলে দেহে এই লৌহের পরিমাণ কমে যা হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিকেও কমিয়ে দেয় কার্যকরীভাবে।
☞ ৪০০মিলিলিটার রক্ত দান করলে রক্ত দাতার দেহ থেকে ৫৭০ ক্যলোরি শক্তি হ্ময় হয়, তাতে রক্তে শর্করার পরিমান স্বাভাবিক থাকে যা ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমায়।
☞ প্রতি ৪ মাস অন্তর রক্ত দিলে দেহে নতুন Blood Cell তৈরীর প্রণোদনা সৃষ্টি হয়। এতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যায়।
☞মিলার-কিস্টোন ব্লাডসেন্টারের একগবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত রক্তদিলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম বলে দেখা গেছে।
সর্বপরি রক্তদানের মাধ্যমে আপনি পাবেন মানসিক প্রশান্তি ও একটি মানুষের পাশে দাড়ানোর আত্নতৃপ্তি, যা আর কোন কিছুর মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই রক্তদিন জীবন বাচাঁন।